ইজমার শর্তগুলো লেখ।
ইজমা (الإجماع) ইসলামী শরিয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস, যা অর্থাৎ মুজতাহিদদের সর্বসম্মত মতামত। যখন কোনো যুগের সব মুজতাহিদ কোনো একটি শরয়ি মাসআলার উপর একমত হন, তখন তাকে ইজমা বলা হয়। এটি কুরআন ও সুন্নাহর পর তৃতীয় উৎস হিসেবে বিবেচিত।
🔷 ইজমার শর্তগুলো নিম্নরূপ:
১. মুজতাহিদদের সর্বসম্মতি থাকা
- ইজমা শুধুমাত্র সেইসব আলেমদের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যারা ইজতিহাদ করার যোগ্যতা রাখেন।
- সাধারণ মুসলমানদের মতামত ইজমার অন্তর্ভুক্ত নয়।
২. একই যুগের মুজতাহিদদের মধ্যে ঐক্যমত থাকা
- ইজমা কার্যকর হতে হলে কোনো নির্দিষ্ট যুগের সব মুজতাহিদদের সম্মতি থাকা আবশ্যক।
- যদি কিছু সম্মতি দেয় আর কিছু বিরোধিতা করে, তবে তা ইজমা গণ্য হবে না।
৩. শরিয়ত ভিত্তিক মাসআলা হওয়া
- ইজমা শুধুমাত্র ধর্মীয়/শরিয়ত সংক্রান্ত বিষয়ে প্রযোজ্য।
- পার্থিব বা বিজ্ঞানভিত্তিক বিষয়ে ইজমা গ্রহণযোগ্য নয়।
৪. সুনির্দিষ্ট দলিলের ভিত্তিতে হওয়া
- ইজমার পেছনে থাকতে হবে কুরআন, হাদিস বা কিয়াসের কোনো দলিল।
- মনগড়া মতামত ইজমা নয়।
৫. সুস্পষ্ট ও নির্দিষ্ট বক্তব্য
- ইজমা বিষয়টি পরিষ্কারভাবে প্রকাশ হতে হবে, যেন এতে কোনো সন্দেহ বা দ্বিমত না থাকে।
৬. কোনো মুজতাহিদের সরাসরি বিরোধিতা না থাকা
- যদি ইজমা ঘোষণার সময় কোনো মুজতাহিদ এর বিরোধিতা করেন, তবে সেটি ইজমা হিসেবে গণ্য হবে না।
৭. মতামতের স্থায়িত্ব থাকা
- ইজমা হয়ে যাওয়ার পর কেউ মত পরিবর্তন করলেও, আগের ইজমা বাতিল হয় না।
✅ উপসংহার:
ইজমা শরীয়তের একটি শক্তিশালী ভিত্তি, যা উম্মাহর ঐক্য, শৃঙ্খলা এবং শরিয়তের বিশুদ্ধতা রক্ষা করে। ইজমার শর্তগুলো পূরণ না হলে কোনো সম্মত মতামতকে শরিয়তসম্মত ইজমা হিসেবে গণ্য করা হয় না।