বৈদেশিক মূলধন ও বৈদেশিক সাহায্যের মধ্যে পার্থক্য লিখ

বৈদেশিক মূলধন ও বৈদেশিক সাহায্যের মধ্যে পার্থক্য

বৈদেশিক মূলধন এবং বৈদেশিক সাহায্য উভয়ই কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, তবে তাদের উৎস, উদ্দেশ্য ও প্রভাব ভিন্ন। নিচে তাদের মূল পার্থক্য তুলে ধরা হলো:

বিষয়বৈদেশিক মূলধনবৈদেশিক সাহায্য
সংজ্ঞাবৈদেশিক মূলধন হলো বিদেশি বিনিয়োগ, ঋণ, রেমিট্যান্স বা অন্য কোনো মাধ্যমে দেশে আসা অর্থ, যা মূলত বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে আসে।বৈদেশিক সাহায্য হলো অন্য দেশ বা আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে অনুদান, স্বল্পসুদে ঋণ বা কারিগরি সহায়তা, যা সাধারণত উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবহৃত হয়।
উৎসবিদেশি বিনিয়োগকারী, বহুজাতিক কোম্পানি, আন্তর্জাতিক ব্যাংক ও সংস্থা।বিভিন্ন দেশ, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি, জাতিসংঘ, দাতা সংস্থা।
উদ্দেশ্যদেশের ব্যবসায়, শিল্প বা অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ করে মুনাফা অর্জন করা।দরিদ্রতা হ্রাস, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও উন্নয়ন প্রকল্পে সহায়তা দেওয়া।
ধরন– সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (FDI)
  • বিদেশি ঋণ (Foreign Loan)
  • রেমিট্যান্স (Remittance)
  • পোর্টফোলিও বিনিয়োগ | – অনুদান (Grant)
  • সহজ শর্তে ঋণ (Soft Loan)
  • কারিগরি ও খাদ্য সহায়তা
  • মানবিক সহায়তা (Humanitarian Aid) | | ফেরত দেওয়ার বাধ্যবাধকতা | বিনিয়োগকারীরা মুনাফা অর্জন করে নিয়ে যায়, ঋণ হলে সুদসহ পরিশোধ করতে হয়। | অনুদানের ক্ষেত্রে ফেরত দিতে হয় না, তবে সহজ শর্তে ঋণ পরিশোধ করতে হয়। | | উদাহরণ | – বাংলাদেশে গার্মেন্টস শিল্পে বিদেশি বিনিয়োগ।
  • চীন ও ভারতের কাছ থেকে নেওয়া অবকাঠামো ঋণ। | – বিশ্বব্যাংকের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রকল্পে অনুদান।
  • দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা।

উপসংহার:

বৈদেশিক মূলধন সাধারণত বিনিয়োগ ও মুনাফার উদ্দেশ্যে আসে, যা দেশের শিল্প ও অবকাঠামো উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। অন্যদিকে, বৈদেশিক সাহায্য মূলত সামাজিক ও মানবিক উন্নয়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণ ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তা করে। তবে, কোনো দেশ যদি দীর্ঘদিন বৈদেশিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে, তাহলে তা স্বাধীন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

বৈদেশিক মূলধন ও বৈদেশিক সাহায্যের মধ্যে পার্থক্য

Leave a Comment