জনসংস্থা ও পূর্ণকর্মসংস্থান বলতে কি বুঝ?
জনসংস্থা ও পূর্ণকর্মসংস্থান বলতে কি বুঝ? জনসংস্থা ও পূর্ণকর্মসংস্থান হলো…
জনসংস্থা ও পূর্ণকর্মসংস্থান বলতে কি বুঝ?
জনসংস্থা ও পূর্ণকর্মসংস্থান হলো অর্থনীতির এমন দুটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা, যা একটি দেশের শ্রমশক্তিকে সর্বোচ্চভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধনের লক্ষ্যে কাজ করে। এই দুই ধারণা একে অপরের সাথে গভীরভাবে সম্পৃক্ত এবং একটি সুস্থ, উৎপাদনশীল ও টেকসই অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি।
জনসংস্থা:
“জনসংস্থা” (Labour Force বা Workforce) বলতে একটি দেশের নির্দিষ্ট বয়সসীমার (সাধারণত ১৫-৬৪ বছর) জনগণের সেই অংশকে বোঝায় যারা কাজ করছে অথবা কাজ খুঁজছে। এর মধ্যে কর্মরত ও বেকার উভয় শ্রেণির লোকই অন্তর্ভুক্ত থাকে। জনসংস্থা দেশের উৎপাদনব্যবস্থার চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।
পূর্ণকর্মসংস্থান:
পূর্ণকর্মসংস্থান (Full Employment) বলতে এমন একটি অবস্থা বোঝানো হয়, যেখানে জনসংস্থার সকল সদস্য তাদের দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী কোনো না কোনো উৎপাদনশীল কাজে নিযুক্ত থাকে। অর্থাৎ, ইচ্ছাকৃত বা কাঠামোগত ব্যতীত বেকারত্ব নেই। এটি কেবল অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার চিহ্ন নয়, বরং সামাজিক সাম্য ও কল্যাণের প্রতীকও।
জনসংস্থা ও পূর্ণকর্মসংস্থান এর গুরুত্ব:
জনসংস্থা ও পূর্ণকর্মসংস্থান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্য হ্রাস এবং সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য। এ অবস্থায় সরকারের উপর চাপ কমে, কর আদায় বাড়ে, উৎপাদনশীলতা বাড়ে এবং জনগণের জীবনমান উন্নত হয়।
বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে
বাংলাদেশে প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক নতুন কর্মক্ষম জনসংখ্যা কর্মবাজারে প্রবেশ করছে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী কর্মসংস্থান না হওয়ায় পূর্ণকর্মসংস্থানের লক্ষ্য অর্জন এখনও চ্যালেঞ্জিং। তাই দক্ষতা উন্নয়ন, কারিগরি শিক্ষা, উদ্যোক্তা বিকাশ এবং শিল্পায়নের মাধ্যমে এই লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।
উপসংহার
জনসংস্থা ও পূর্ণকর্মসংস্থান একটি দেশের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যের মাপকাঠি। এই দুইটি ধারণার সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি জাতি তার মানবসম্পদকে সম্পদে রূপান্তর করতে পারে এবং টেকসই উন্নয়নের পথে অগ্রসর হতে পারে।
রেফারেন্স:
- International Labour Organization (ILO) – Employment and Labour Market Policies
- BBS Labour Force Survey – Bangladesh Bureau of Statistics

